প্রয়াত মায়ের কাছে জন্মদিনে পূজা চেরির আবদার
বিনোদন ডেস্ক : মা ছাড়া ঢাকাই সিনেমার চিত্রনায়িকা পূজা চেরীর প্রথম জন্মদিন আজ। চলতি বছরের মার্চ মাসে মাকে হারিয়েছেন এই অভিনেত্রী। যে কারণে এবারের জন্মদিনে বিষাদ ঘিরে রেখেছে পূজাকে।
প্রয়াত মায়ের উদ্দেশে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি খোলা চিঠি লিখেছেন এই নায়িকা। যেখানে উঠে এসেছে তার মনের ভেতরে জমে থাকা একরাশ কষ্ট, বেদনার কথা।
মায়ের সঙ্গে বেশ কয়েকটি ছবি প্রকাশ করে পূজা লিখেছেন, মা, এই প্রথম তোমাকে ছাড়া আমার জন্মদিন এসে গেল। খুব করে মনে পড়ছে গত বছরের কথা। তোমার শরীরটা তেমন একটা ভালো ছিল না, কিন্তু আমি মন খারাপ করে তোমার সাথে একটু উচ্চস্বরে বলে উঠলাম—‘সবার মা কিছু না কিছু করে, তুমি তো আমার জন্য পায়েশও বানাচ্ছো না।
তুমি সেই দুর্বল শরীর নিয়ে আমার জন্য পায়েশ বানিয়ে নিয়ে আসলে। যদিও পায়েশটা ভালোভাবে রান্না হয়নি। একটু চাল-চাল ছিল তারপরও বানিয়ে নিয়ে এসেছিলে তো, এটাই অনেক। কিন্তু মামুনি এইবারও যে সেই একই পায়েশ খেতে ইচ্ছে করছে তোমার নিজ হাতে বানানো।
উফ, কান্নায় চোখটা ভরে উঠছে। তুমি নেই ৬ মাস হলো। কতদিন তোমাকে দেখি না গো মামুনি। জানি না সৃষ্টিকর্তা আমাকে কতদিন বাঁচিয়ে রাখবে। তবে যতদিন এভাবে বেঁচে থাকব কীভাবে বুকে এই আটকে থাকা কষ্টকে দমিয়ে রাখব? তা তো সম্ভব না।
তবে একটা কথা কি জানো? তুমি আজকে আমায় নতুন করে জন্ম দিলে। নতুন এক পূজা। যার কিনা একাই লড়াই করতে হবে। আমি জানি তুমি আমাকে দেখছ। তুমি সবসময় আমার পাশে আছ, তাইতো এখন পর্যন্ত কোনো কালোছায়া আমাকে ঘিরে রাখতে পারেনি। তুমি তোমার কথা ঠিক রাখছ। এইবার আমার পালা। দেখবে তোমাকে দেওয়া কথা আমি ঠিকই রাখব। তোমার অস্তিত্ব কারও কাছে না থাকলেও আমার কাছে সবসময় থাকবে। তুমি আছ, আমার পাশেই আছ। এই যে আমি এত কথা লিখছি, আমি তো অনুভব করছি তুমি আমার পাশেই আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছ।
জন্মদিনে স্বার্থপরের মতো একটা কিছু চাইব মামুনি। এপারে তো নিজের রাখোনি, সবসময় আমার খেয়ালই করে গেছিলে। ওপারে অন্তত নিজের খেয়াল রেখ মামুনি। ভালো থেকো আমার লক্ষ্মী মামুনি। তোমার মেয়েটা আর কিছু লিখতে পারছে না চোখভর্তি জল চলে আসছে আর চোখটা ব্যথা করছে। অনেক ভালোবাসি।
প্রসঙ্গত, গত ২৪ মার্চ)সকাল ১১টার দিকে মিরপুরের নিজ বাসায় মৃত্যুবরণ করেন পূজার মা ঝর্ণা রায়। দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থতায় ভুগছিলেন তিনি। ডায়াবেটিসের রোগী ছিলেন। বেশ কয়েকদিন ধরে অভিনেত্রীর মায়ের শারীরিক অবস্থার অবণতি হতে থাকে। বাসাতেই চিকিৎসকের পরামর্শে তার চিকিৎসা চলছিল। এরপর ২৪ মার্চ সকালেই পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান।